১২ জুন ২০২২

বল্লাল ঢিপি

 বল্লাল ঢিপি - 

কৃষ্ণনগর শহরকে ডানদিকে রেখে, জলঙ্গী নদীর ব্রিজ পেরিয়ে, ধুলো ওড়ানো এন-এইচ থার্টিফোর বরাবর বহরমপুর যেতে যেতে বাঁদিক ঘুরে রেললাইন- লেভেল ক্রসিং পার হয়ে যে রাস্তাটা মায়াপুরের ইস্কন মন্দিরের দিকে গেছে সেটা ধরে খানিকটা এগোলে বামনপুকুর বাজার। ডানদিকে গলি পথ ধরে অল্প এগোলেই একটা পার্কের মত। সেটাই বল্লাল ঢিপি। বড়রাস্তা থেকে টোটো যায়। রিকশা যায়। আমরা গেছিলাম দু'চাকায়। কলকাতা থেকে দূরত্ব দেড়শো কিলোমিটারের একটু কম। 

দেখার কি আছে!  বললে কিছুই নেই, আবার অনেক কিছুই! একটা প্রাচীন স্থাপত্যের ধ্বংসস্তূপ।  কোনোকালে কোনও হিন্দুমন্দির বা বৌদ্ধবিহার ছিল। ছোট আকারের পোড়ামাটির ইঁটের চওড়া দেওয়াল। ইঁটের কৌণিক সজ্জা। এর বয়স নাকি অন্তত আটশো থেকে ন'শো বছর! সে'আমলে এখানে সেনবংশের রাজত্ব ছিল। রাজা বল্লালসেনের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরী এই স্থাপত্য বলে অনুমান। তাই নাম বল্লালঢিপি। ঢিপি খুঁড়ে বের করার সময় কিছু মূর্তি আর তামার আর লোহার কিছু জিনিসপত্র পাওয়া গেছিল। সেগুলো নিয়ে গিয়ে রাখা হয়েছে কলকাতার আশুতোষ মিউজিয়ামে।  

'আর্কিওলজিক্যাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া' থেকে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শেষ করে এখন শুধু সংরক্ষণ করা হয়। রেলিং দিয়ে ঘেরা, তাই পার্কের মতই দেখতে লাগে। টিকিটের কোনও ব্যাপার নেই, প্রবেশ অবাধ। 

আর্কিটেকচার অথবা আর্কিওলজি'রও ছাত্র নই। শুধুই পুরনো ইতিহাসে আগ্রহী। তাই যাবতীয় তথ্যই উইকি, গুগল অথবা গেট দিয়ে ঢুকেই 'আর্কিওলজিক্যাল সোসাইটি'র বসানো বোর্ডটা থেকেই পাওয়া।

এত পুরনো! এত শ'বছরের রোদ-ঝড়-জল সয়ে দাঁড়িয়ে আছে, ভাবলেও অবাক লাগে! শীতের দিন ফুরনো বিকেলে চুপ করে দাঁড়াই দুটো মিনিট। ইতিহাস ছুঁয়ে।

ডিসেম্বর ২০২১




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন